আমার আর আমার স্ত্রীর জীবন, আমাদের ছেলের প্রতিষ্ঠার পর, যেন এক অন্য রূপ ধারণ করবে। একদিকে গর্বের এক পরিপূর্ণ অনুভূতি, আর অন্যদিকে এক শূন্যতার করুণ ছায়া। আমরা সবসময় এই দিনটার স্বপ্ন দেখেছি—যখন আমাদের ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়াবে, নিজের পরিচিতি তৈরি করবে। কিন্তু সেই দিন যতই কাছে আসে, মনে হয়, এই বাড়িটা যেন ধীরে ধীরে শূন্যতায় ডুবে যাচ্ছে। ও তখন আর এই বাড়ির বাসিন্দা থাকবে না। হয়তো ও এক দূর দেশে যাবে, হয়তো ভারতের কোনো দূরপ্রান্তে। বাড়ি ফিরবে বছরে একবার, কিংবা দুই-তিন বছরে। তখন ওর আসাটা যেন অতিথির মতো মনে হবে। সেই উষ্ণতার অভাব নয়, বরং সময় আর দূরত্বের বেড়াজালে সম্পর্কের রূপ বদলে যাবে। যে ফোনকলগুলো ছিল আমাদের প্রতিদিনের সান্ত্বনা, তা ক্রমশ কমে যাবে। ও নিজেকে এমন ব্যস্ত করে ফেলবে যে আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় হয়তো আর পাবে না। আমরা নিজেদের সান্ত্বনা দেব, “এটাই তো আমরা চেয়েছিলাম। ও যেন সফল হয়, নিজের স্বপ্নপূরণ করে।” তবুও, প্রতিদিনের সেই অনুপস্থিতি, ওর স্নেহমাখা কণ্ঠস্বর না শোনার ব্যথা, যেন আমাদের নীরবতা আরও গভীর করে তুলবে। যে বাড়িটা ছিল ওর ছোটবেলার হাসি-আনন্দের সাক্ষী, সেটাই যেন এখন এক নিস্তব্ধ মন্দিরে...